কবিতা : দেবহূতি সরকার
যা ঘটে প্রতিদিন
জীবন ঘেঁটে ঘেঁটে, জীবন ঘেঁটে ঘেঁটে
অবিদ্যার অন্ধকার থেকে
ঢুকে পড়ি বিদ্যার অন্ধতম জগতে।
একটা সুরঙ্গ থেকে বুকে হেঁটে
অন্য আর এক সুরঙ্গে।
এ বড় রঙ্গ জাদু।
বাজীকরের খেলার মত লাগে।
ক্যানালের ভেতরে ঢুকে পড়েছিল একদল মানুষ
আর কেউ কেউ পৌঁছে গেছিল
আলোর সামনে—
শুধু একটি লোহার গারদের ব্যবধান।
আর বুঝেছিল তাকে ভাঙা যাবে না।
এইসব দেখি আর রিজেক্ট করতে থাকি।
মৃত্যুগুলি দেখি আর
দেখি তার কারণ।
কোথা থেকে শুরু করা যায় তবে?
বিন্দু থেকে বিন্দুশূন্যতায় এসে থেমে থাকি।
এই জীবন তবে শুধু কল্পনামাত্র?
ওয়ার্মহোল থেকে বেরিয়ে আমি কি
আবার এই বিশ্বে এসে জানিয়ে যেতে পারবো
এও এক চক্রকার খেলা?
২.
হাতের পায়ের সমস্ত লোম উপড়ে ফেলি।
মসৃণ সাদা চামড়া।
ভাবি এই কি আমার পা?
কচি ধানগাছে ক্ষেত ভরে আছে—
ক্ষেতটি অদৃশ্য তবু।
উন্মুক্ত ক্ষেত্র প্রত্যক্ষ করি,
তারপর খনন।
অভ্যেস করি ফসল ও রিক্ততা,
ভুলে যেতে চাই সমস্ত সূচনাবিন্দু।
ফলে আর কোনো বক্ররেখাই মিলে উঠতে পারে না।
গোল গোল গোল গোল ঘুরে
ঢুকে পড়ে কেন্দ্রের অসীম শূন্যতায়।
৩.
চুল কেটে ফেলি।
ত্যাগ করতে চাই সমস্ত মায়া।
তবু সেই মায়ার চিহ্ন জমিয়ে রাখি— একগুচ্ছ চুল।
যেমন ভাবে বাবা ব্যাঙ্কের হিসেব নিকেশের মধ্যেও
সযত্নে জমিয়ে রাখে— এম এ ক্লাসের দর্শনের নোট।
যতই কাটতে চাই
বুঝতে পারি আরও বেশি মায়াময়
হয়ে উঠছি আমি শূন্যের মত।
৪.
বকভস্মের তিরস্কারের মত গায়ে এসে বেঁধে
আমারই ক্রোধ।
মনে পড়ে যায় দিদার হাসি মুখ
যখনও দিদার মেরুদণ্ড ধনুকের মত বেঁকে যায় নি।
তারপর দিদার স্তব্ধতা হয়ে ক্রমে,
এসে পড়ি মায়ের দুই চোখে,
যার কথা আগে আমাকে অনেকেই বলেছিল,
দীঘির মত শান্ত টলটলে।
ইতি ইতি ইতি।
যেখান থেকে আর কিছু শুরু করা যায় না।
বাকিটুকু অবাঙমানসগোচর।
শম শম শম।
প্রতিটি বক্ররেখাই আসলে সময়ের বিভ্রম মাত্র।
আরশোলাদের ওড়াওড়ি দেখি।
খুবই ভালো লাগলো
ReplyDelete- অলোকপর্ণা