Posts

কবিতা : দেবহূতি সরকার

Image
যা ঘটে প্রতিদিন জীবন ঘেঁটে ঘেঁটে, জীবন ঘেঁটে ঘেঁটে অবিদ্যার অন্ধকার থেকে ঢুকে পড়ি বিদ্যার অন্ধতম জগতে। একটা সুরঙ্গ থেকে বুকে হেঁটে অন্য আর এক সুরঙ্গে। এ বড় রঙ্গ জাদু। বাজীকরের খেলার মত লাগে। ক্যানালের ভেতরে ঢুকে পড়েছিল একদল মানুষ আর কেউ কেউ পৌঁছে গেছিল আলোর সামনে— শুধু একটি লোহার গারদের ব্যবধান। আর বুঝেছিল তাকে ভাঙা যাবে না। এইসব দেখি আর রিজেক্ট করতে থাকি। মৃত্যুগুলি দেখি আর দেখি তার কারণ। কোথা থেকে শুরু করা যায় তবে? বিন্দু থেকে বিন্দুশূন্যতায় এসে থেমে থাকি। এই জীবন তবে শুধু কল্পনামাত্র? ওয়ার্মহোল থেকে বেরিয়ে আমি কি আবার এই বিশ্বে এসে জানিয়ে যেতে পারবো এও এক চক্রকার খেলা? ২. হাতের পায়ের সমস্ত লোম উপড়ে ফেলি। মসৃণ সাদা চামড়া। ভাবি এই কি আমার পা? কচি ধানগাছে ক্ষেত ভরে আছে— ক্ষেতটি অদৃশ্য তবু। উন্মুক্ত ক্ষেত্র প্রত্যক্ষ করি, তারপর খনন। অভ্যেস করি ফসল  ও রিক্ততা, ভুলে যেতে চাই সমস্ত সূচনাবিন্দু। ফলে আর কোনো বক্ররেখাই মিলে উঠতে পারে না। গোল গোল গোল গোল ঘুরে ঢুকে পড়ে কেন্দ্রের অসীম শূন্যতায়।

কবিতা : শাশ্বতী সান্যাল

Image
চিড়িয়াখানায় ১. মাঝরাতে বৃষ্টি বড় নিদারুণ। এবং সুন্দর। জলের আওয়াজে জেগে ওঠে মরা পাখিদের ঝাঁক ক্রমশ দক্ষিণে, আরও দক্ষিণে বাতাস ডিঙিয়ে তাদের ডানার গাঢ় ঝটপট, চিৎকার, নখরের দাগ  উড়ে যায়। ছেঁড়া পালকের মতো সাদা শিলা ঘুমের ভিতরে সশব্দে ছড়িয়ে পড়ে গৃহস্থের বীর্যমাখা চাদরে, স্বপ্নের মধ্যে... ভয় পেয়ে ছিটকে ওঠে সে মানুষ। তারপর আবিষ্কার করে পাশের বালিশে তার গৃহবন্দী পাখিটির শব শুয়ে আছে... ২. বন্ধুদের মৃতদেহ ডানা ঝাপটায়, শুধু ওড়ার সম্মতিটুকু, - এই দিতে পারি...  শেকলে সন্ত্রাস নিয়ে কত অপেক্ষায় থাকবে ওরা? ঝড়ের চঞ্চুতে বসে আমাদের কোনো গান নেই সঙ্গীত প্রাচীন শস্য, এই অনভিজ্ঞ কৃষিমাঠে জল-হাওয়া-মেঘ,আর দুএক পশলার মতো স্বরবিতানের কিছু পাতা বেঁচে আছে.... ফসল রোয়ার দিনে কড়িবরগা থেকে লক্ষ্মীপেঁচা ডেকে ওঠে, এমত বিশ্বাসে আমাকে জড়িয়ে ছিল বন্ধুদের পুরোনো নখর... মুখর রক্তের দাগ- এই দিতে পারি। বড়জোর, অস্ত্রের সংকোচ ঢেকে শমীবৃক্ষে বেঁধে দেব শব মৃতের বন্ধুরা এসো, ডানা ঝাপটাও। যেন মরা ফসলের ক্লান্তি বয়ে চলে কবিতাউৎসব... ৩.

কবিতা : বেবী সাউ

Image
হাইওয়ে প্রতিটি কবিতা নাগরিক  প্রতিটি অক্ষরে মেশে পিচ আর লরীর আঘাত  লোহার শেকলে জীর্ণ লেপার্ড শরীর  লালা, থুতু, বমি মেখে ঘরে ফেরে রোজ  ফ্লুরোসেন্ট চোখে দেখে চষির পায়েস  ঘুম পায় তার... চোখ মেলে চেয়ে থাকে মৃত ধানক্ষেত  জখম ডানায় নার্সিংহোম এভাবে পরিখা দেখে  আকুলিবিকুলি মন  ফণা তুলে থাকা চকচকে ইস্পাত  ও তার আচ্ছন্ন হস্তক্ষেপ মেনে  ভূতের আঙুল সেই  ধোঁয়া অভিমুখে হাঁটে  উঁচু পাজরের হাড়ে জমে নেশা ও নৃশংস  প্রতিটি হত্যার আগে সাদা ব্লেড...  সাদা অ্যাপ্রণের দীর্ঘ লকলকে জিভ অদ্ভুত সংযোজনে বিয়ে সেরে ফেলে...হাত ধোয় লোহার বাসরে কেকা    ময়ূরের ডাক ভেসে ওঠে...   কর্কশ অথচ লিপ্ত  চাটুকারিতার বেশে অলস কড়িবরগা  চোখ পেতে রাখে  রুরাল আবাসে পাতে দীর্ঘ সুড়ঙ্গের পথ   ইশারায় ময়ূরীর ডাক  শাণিত তীরের ফলা খানখান মাস্তুল ও বুড়ো নাবিকের গলা। কাটো। বাজার প্রাইভেট গাড়ি ঘোরে ইঁদুরের গলি ভেঙে চক্রবালে গেঁথে যায় হতভাগ্য মানুষের চাকা   এপথে সুগম গতি  এপথেই হাঁড়গোড়- পাঁজরের  পোলো গ্রাউন্ডের ধুলো  তেজি স

কবিতা : অর্থিতা মণ্ডল

Image
আত্নলিপি   এক আজ কতবার তোমাকে খুঁজেছি জানো।আজ কতবার ভেবেছিলাম নদীর কথা।কতবার তীব্র হয়েছে আকন্ঠ আবেগ।কবে যেন বিধাতা কপালে রেখেছেন নীলকন্ঠ আগুন।আর আমি পুড়ে যাব বলে নিঃশব্দে পান করেছি বিষ।ততবার  তুমি দিয়েছ অমৃত স্বাদ।বিষ, অমৃতর সহাবস্থানে আমি এক জলনারী।জলনারী পুড়ে গেলেও নিস্তব্ধ বিহার। জাদুদণ্ড দাও তুমি প্রেম,আর আমি পুড়তে পুড়তে বারবার ফুল হই।আরও একবার ধ্যানে বসি,জন্ম জন্মান্তর ধরে রাই হই।রাই আমি অনন্ত প্রবাস।বারান্দায় রোজ এসে ডেকে যায় শুক - সারি গান।তোমার বুকের ওম টুকু পাব বলে আমি চেয়ে নেই অনন্ত বৈঠা।আমার ভাঙা বাড়ির ভেতর মৃত ঘর কতবার তোমায় ডাকে শোনো। সবটুকু সুখ,সবটুকু শান্তি তোমায় দেব বলে আমি ডুবতে ডুবতে জাগি,ভাসতে ভাসতে তোমার জন্যে বিছিয়ে রাখি নির্ভার আশ্রয়।তুমি রোজ বলেছ আমায় " রাইকিশোরীই শ্রিয়া হয় জেনো।" দুই বৃষ্টি হলে এখন আর মেঘ জমে না।আমি যক্ষপ্রিয়ার কথা ভাবি।জানো,এখন আর বিরহর ভেতর কোনো প্রাচীন শিল্পীর রূপ চোখে পড়ে না।অবসন্ন দিন জুড়ে ভারি হয় শ্বাস।বৈষ্ণবী রং নিয়ে কেঁপে উঠি। তখন আঘ্রাণ ভেসে আসে তোমার বুকের ওমের।আরও একবার পুড়ে যাই রাই।

কবিতা : রুমা তপাদার

Image
বিষ ও বিষয় ১ বিষাক্ত জীবন থেকে কিছুটা বিষয় টেনে নিই  অসাধ্য  বিষের মতো করে   সাধন আকার বিষ আমি পাত্র বিষ   বিষ বিচ্ছুরণ স্নান  তীব্র ঘাত তীক্ষ্ণ  ভয় পেয়ে  চলে যেতে যেতে  একবার ফিরে দেখি আমি সেই চুল খোলা মেয়েটির চোখ,বিষ। জীবনের পা সামান্য  টলে যায় মহা ধ্বনি বিষ জন্ম নেয় দৃশ্যতঃ সাজানো মৃত্যু হয়   সংসার আমাকে পৃথিবীর মতো ভুলে থাকে আদেখা  বিষকে জীবকোষ ভাবে অমৃত জন্মাবধি মৃত্যু নড়ে উঠলে তখন ভাবনা আসে  শুধুমাত্র মন্থন নামেই যদি কাল জন্ম দিত....        ২ এখানকার স্থানীয় বৃষ্টিরা আমাকে চেনে কতবার লাফিয়ে এসেছে কাছে বুকের ভিতর নিংড়ে আমাকে শুকনো করে গেছে  ওরা চেনে বলেই মেঘ কালো করে আসে  ভীষণ ভিজিয়ে দিতে   অন্ধকার ছাড়া কেউ কখনো ভেজেনি তাই মেঘ জমে  জমিন আকাশ ঢেকে যায় ছটফট করে ওঠে পাণ চক্র ঘুরছে ধ্বংস কাল ধ্বংস জন্ম    জীবনের সমস্ত কুলান অকুলান ৩ সমস্ত জীবন আমি শুধু নিজেকে ভেবেছি,নিজেকে ধরেছি, কেঁদেছি হেসেছি ভালোবেসেছি।আমাকে ভালোবাসার জন্যই আমার জন্ম। নিজের দুচোখ ছাড়া কেউ আর এতো গভীরে দেখেনি। ভালোবেসে আমি শরীরের প